রাফাত ইয়াসির হাসান, রাঙামাটি :: রাঙামাটি জেলা পুলিশ রিজার্ভ অফিসের এসআই শওকত আলী ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে সহকর্মী চার পুলিশকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ার পর ওই এসআইকে লংগদু থানার একটি ক্যাম্পে বদলি করা হয়েছে। এমন ঘটনায় রাঙামাটি জেলা পুলিশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সাক্ষ্য হিসেবে ঘটনার একটি ভিডিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে পেয়েছেন— সংশ্লিষ্ট সূত্র একথা নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ৫ জন কর্মকর্তা এই ঘটনার সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত অন্তত ছয় মাস ধরে বিভিন্ন সময়ে রাঙামাটি জেলা পুলিশ রিজার্ভ অফিসের ওই এসআই জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করার এসব ঘটনা ঘটিয়ে আসছিলেন। ঘটনার শিকার চারজনই কনস্টেবল পদবির। রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এই চার কনস্টেবল কল্যাণ শাখা ও ডিও শাখায় কর্মরত রয়েছেন।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা সেই এসআই শওকত ২০০৫ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। বদলি হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি রাঙামাটি জেলা পুলিশ রিজার্ভ অফিসে রিজার্ভ অফিসার ওয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রাঙামাটিতে কর্মরত নারী এসআই হ্যামি প্রু মারমা ওরফে সামিয়া হোসেন ওরফে খাতিজা আকতারের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভাগীয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ‘অনৈতিক সুবিধা’ নিয়ে গোপন করার অভিযোগও রয়েছে এসআই শওকতের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পে পোস্টিংসহ নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই এসআই সহকর্মী কনস্টেবলদের সঙ্গে সমকামিতায় লিপ্ত হতেন।
জানা গেছে, দিনের পর দিন এভাবে বলাৎকারের শিকার একজন কনস্টেবল কৌশলে বলাৎকারের পুরো মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে পুলিশ বিভাগের গোয়েন্দা শাখায় পাঠান। পুলিশ সদরদপ্তর বিষয়টি অবগত হওয়ার পর চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজিকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের সুপারিশও করা হয়।
ভিডিও ক্লিপে এসব ঘটনার প্রমাণ পাওয়ার পর গত ২০ আগস্ট চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে এসআই শওকত আলী ভুঁইয়াকে রাঙামাটিরই লংগদু থানার গুলশাখালী ক্যাম্পে বদলি করা হয়েছে।
জানা গেছে, পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চট্টগ্রামে ডিআইজি অফিস তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে। এর আগে রাঙামাটি জেলা পুলিশও তদন্ত শুরু করে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এসআই শওকত আলী ভুঁইয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’ তথ্য সুত্র: চট্টগ্রাম প্রতিদিন
পাঠকের মতামত: